দেশের প্রখ্যাত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, গীতিকবি ও চলচ্চিত্র পরিচালক গাজী মাজহারুল আনোয়ার আর নেই। আজ রোববার (চৌঠা সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিলো ৭৯ বছর। আগামীকাল সোমবার (৫ই সেপ্টেম্বর) সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বজনের শ্রদ্ধার জন্য তাঁর মরদেহ রাখা হবে। এরপর নেয়া হবে এফডিসিতে। পরে, বনানী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হবে। প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি গানের রচয়িতা তিনি। একইসাথে সফল চলচ্চিত্র পরিচালকও। এই কিংবদন্তীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতিসহ বিভিন্ন মহল শোক জানিয়েছে।
বাংলার সংস্কৃতি অঙ্গন থেকে নিভে গেলো আরো একটি জ্বলজ্বলে প্রদীপ। ‘জয় বাংলা বাংলার জয়,একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল’, ‘একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়.. এমন আরো অনেক কালজয়ী গানের স্রষ্টা গাজী মাজহারুল আনোয়ার ৭৯ বছরে বিদায় নিলেন জীবন থেকে। পরিবারের সদস্যরা জানান, রোববার সকালে বাথরুমে যাওয়ার পথে পড়ে যান তিনি। সাথে সাথে হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন শুভাকাঙ্খিরা।
তাঁর মেয়ে কন্ঠশিল্পী দিঠি আনোয়ার যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। বাবার মৃত্যু সংবাদ পেয়ে রোববারই দেশের পথে রওনা হওয়ার কথা তার।
সব্যসাচী এই গুনীজন ছিলেন একাধারে সফল কাহিনিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্রপরিচালক। তাঁর প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান দেশ চিত্রকথা থেকে শাস্তি, স্বাধীন, শর্ত,শ্রদ্ধা, ক্ষুধা, তপস্যা, এই যে দুনিয়াসহ আরো কয়েকটি চলচ্চিত্রপ্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন।
১৯৬২-৬৩ সালে মেডিকেল কলেজে পড়ার সময় গাজী মাজহারুল আনোয়ারে লিখেছিলেন প্রথম গান।১৯৬৪ সালেরেডিও পাকিস্তানে পেশাদার গীতিকার হিসেবে জীবন শুরু করেন তিনি।এরপর,বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে।
তাঁর গানে যেমন আছে প্রেম ও বিরহ, তেমনি আছে মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম, প্রকৃতির কথা। গীতিকার হিসেবে ৫ বার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এছাড়াও ২০০২ সালে একুশে পদক, ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট স্বর্ণপদক, এস এম সুলতান স্মৃতি পদক, একাধিকবার বাচসাস ও বাসাপ পদকসহ শতাধিক সম্মাননা পেয়েছেন এই কিংবদন্তী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক পরিষদের উপদেষ্টা ছিলেন।
১৯৪৩ সালের ২২শে ফেব্র“য়ারি দাউদকান্দি উপজেলার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহন করেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়ে, নাতি নাতনিসহ অসংখ্য শুভাকাঙ্খি রেখে গেছেন।